বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স
ডে
সুপ্রিয় সে্নগুপ্ত
কুয়াশা কাটা ভোরের অবসানে রুপোল রোদের চাদরে ঢাকা শুক্লা পঞ্চমীর সকালে
দ্লবদ্ধ ছাত্র-ছ্ত্রী কন্ঠে পরিচিত কোরাস-------
“জয় জয় দেবী চরাচর সারে কুচযুগ শোভিত মুক্তা হারে
বীনা রঞ্জিত পুস্ত্ক হস্তে ভগবতী ভারতী দেবী নমস্তুতে ..
সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে
বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যান দেহী নমস্তুতে ।।
মাঘ মসের এই পঞ্চমীটি মা সরস্বতীর আরাধানা দিবস হিসাবে ছাত্র-ছাত্রী সমাজ যতটা
পরিচিত তার চেয়ে বোধহয বেশি পরিচিত বাঙালির ‘ভ্যালেন্টাইন’স ডে’ হিসাবে. বাড়িতে ক্লাবে
কোচিং ক্লাসে, স্কুলে, ছোট থেকে বড় সব বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের হাত জোড় করা প্রনাম
দৃ্শ্যের পাশাপাশিই চোখে পড়ে দুষ্টু চোখের নির্বাক ছোটাছুটি. কেউ কেউ বা মৌনতা
ভেঙ্গে ভাবে সাবে , অর্ধসত্য মোড়কে বলেই দেয় – আমি তোমায় ভা----সি, তুমি --?
সিংহ ভাগ ছেলেরা পাজামা পাঞ্জাবী বা রং চঙ্গে... চোখে পড়ার মত পোশাক আর মেয়েদের
তো কথাই আলাদা।
শতকরা ১00 ভাগ মেয়েই শ্যাম্পূ করা
খোলা চুলে কিছু কিছু শিশির কনার সাজে আর বসন্তী রঙের শাড়ীর ভাঁজে ভাঁজে যেন এক একটি জীবন্ত প্রতিমা।
অনেক শিশুদের ক্ষেত্রে যেমন পড়াশুনার প্রথম ‘হাতেখরি’-র দিন হিসাবে বেছে নেওয়া
হয এই দিন টিকে, একই ভাবে এই বিশেষ দিনটিই কৈশোর ও যৌবনের কিনারে দাঁড়ানো অনেকের
কাছে প্রথম প্রেমের স্বীকৃতী জ্ঞাপনের দিবস হিসাব চিহ্নিত।।
বিশ্বমানচিত্রে এখন অবশ্য অনেক বদল এসেছে, হাতে এসেছে মোবাইল, কিন্তু প্রেমের
সাবেকিয়ানায় সরস্বতী পুজো আজও বাঙালির কাছে চিরকালীন প্রেম দিবস।
দীর্ঘদিনের একটা মানসিক প্রস্তুতি থাকে এই দিনটার জন্য... বন্ধু –বান্ধবী সবাই
কে একটা সুত্রের মধে নিযে পরিকল্পনা মাফিক এগোনো---- পরস্পরিক মুগ্ধতা---- পাগল
করা আর সবশেষে.........
সেই চুরান্ত সন্ধিক্ষন = পাগলামো..................শুধুই পাগলামো.........
এ যেন অঞ্জলি মন্ত্রের পর প্রনাম স্তোত্র কিংবা রচনার শেসে উপসংহারের মত যার
রেশ অমলিন থাকবে মননে..... ছুঁয়ে থাকবে হৃদয়ের লুকানো স্তরগুলোকে।
সরস্বতীর স্তব মন্ত্রে শুরু হওয়া সরল
ভালোলাগাই যেন পরিনতি পায় ভালবাসার অমোঘ রুপকথায়।
তাই বসন্ত পঞ্চমী আর বাঙালি ভ্যালেন্টাইন্স
ডে আজ পরস্পরের সিনোনেম।।